পৃথিবীর ৭টি সবচাইতে দামি বস্তু, যেগুলোর মূল্য স্বর্ণের চাইতেও কয়েক গুণ বেশি | Techtunes


যখন কথা হয় খুব মূল্যবান জিনিস বা কোন মূল্যবান বস্তু সম্পর্কে, তখন সবার প্রথম আমাদের মাথার মধ্যে একটা ধাতুর কথাই চলে আসে, আর সেটা হল সোনা বা স্বর্ণ। বাস্তবে এটি সত্যিই যে, স্বর্ণকে একটা খুব মূল্যবান বস্তু হিসেবে ধরা হয়।

বাস্তবিক জীবনে আমরা ও স্বর্ণকে একটি অতি মূল্যবান বস্তু হিসেবে বিবেচনা করে থাকি। প্রত্যেকটা দেশের ধনসম্পত্তি ও কিন্তু স্বর্ণের রিজার্ভ এর উপরে নির্ভর করে। পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটা মানুষই সোনাকে খুবই পছন্দ করে এবং যতটা সম্ভব স্বর্ণকে সঞ্চয় করে রাখার চেষ্টা করে। এই কারণে যদি আপনি সাধারণভাবে কাউকে জিজ্ঞেস করেন যে, সবথেকে দামি এবং মূল্যবান ধাতু কি? তাহলে তারা কোন সময় নষ্ট না করেই একেবারেই বলে দেবে যে, সবচাইতে মূল্যবান ধাতু সোনা।

তবে স্বর্ণই কিন্তু পৃথিবীতে সবচাইতে দামি বস্তু গুলোর মধ্যে থেকে সর্বোত্তম নয়। বরং, স্বর্ণের চাইতেও আরো অনেক মূল্যবান ধাতু রয়েছে, যেগুলো স্বর্ণের চাইতে ও কয়েকগুণ বেশি দামি। আপনি কি জানেন যে, পৃথিবীতে এমন কিছু জিনিস আছে যা স্বর্ণের থেকেও অনেক অনেক গুণ বেশি দামি? আপনি যদি এখনো পর্যন্ত এটি সম্পর্কে না জেনে থাকেন, তাহলে আজকের এই টিউন টি সম্পূর্ণ দেখবেন।

আজকের এই টিউনটির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন, স্বর্ণের থেকেও কত দামী দামী জিনিস আমাদের পৃথিবীতে আছে।

১. Cocaine

Cocaine (কোকেন)

আপনি হয়তো বা এই পদার্থটির নাম অবশ্যই শুনে থাকবেন। কেননা এই বিষাক্ত নেশা বহু-দেশের যুবক-যুবতীদের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই বস্তুটিকে তাদের দেশে নিষিদ্ধ করে রেখেছে। তবে অনেক দেশে এই বস্তুটিকে নিষিদ্ধ করে রাখলেও এটি মাদক হিসেবে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত হয়েছে আসছে।

তবে এই নেশাটা কিন্তু মোটেও সস্তা নয়। এক গ্রাম কোকেনের দাম ৫০০০ থেকে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি এই বস্তুটির দাম বিভিন্ন দেশ ভেদে আরো অনেক বেশি। অতএব, দশ গ্রাম কোকেনের দাম ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, যা সোনার দাম এর থেকে অনেক বেশি।

কোকেন মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হলে ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর সীমিত ব্যবহার রয়েছে। শরীরের নানা অসাড়তা দূর করতে এবং নাকের চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে রক্ত পড়া বন্ধ করতে কোকেনের সীমিত ব্যবহার হয়ে থাকে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে কোকেন সামান্য পরিমাণে ব্যবহার হলেও ব্যাপকহারে এটি নেশা করার কাজে ব্যবহার হয়। তাই বিশ্বজুড়ে প্রত্যেকটি দেশের এই মাদকদ্রব্য টি মাদক হিসেবে গ্রহণ করা অপরাধ বলে গণ্য করা হয়।

২. Heroin

Heroin (হিরোইন)

পৃথিবীর দ্বিতীয় সবথেকে ভয়ঙ্কর নেশা হেরোইন। এটা শুধু শরীরের ক্ষতি করে না, এটি বরং নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির পকেটের ও ক্ষতি করে। হেরোইনের এক গ্রামের দাম ৮০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এবার এই বস্তুটিকে সোনার সঙ্গে যদি আপনি তুলনা করেন, তাহলে দশ গ্রামের দাম এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

এসব থেকে দেখা যায় যে, এটি সোনার দামের থেকে তিনগুণ বেশি। হিরোইন কিন্তু এটি এক ধরনের ব্যথানাশক ঔষধ হলেও মাদক দ্রব্য হিসেবে এটি বেশি ব্যবহার হয়।

৩. Platinum

Platinum

বর্তমান যুগে প্লাটিনাম মানুষের প্রথম পছন্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু একে কেনা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। ‌ আর যে কোন ব্যক্তি এই বস্তুটি সংগ্রহ ও করে না। প্রতি গ্রাম প্লাটিনাম এর দাম প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। প্লাটিনাম এর এত দাম হওয়ার পেছনে কারণ হলো, ক্যান্সারের ওষুধ তৈরি করার জন্য প্লাটিনাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে‌।

ক্যান্সারের ঔষধ তৈরি করার জন্য প্লাটিনাম ব্যবহার হওয়ার কারণে ক্যান্সারের ওষুধ গুলোর দাম এত বেশি হয়ে থাকে।

৪. Rhodium

Rhodium

এই ধাতুটি ও প্লাটিনাম এর ফ্যামিলি থেকে আসে। এই ধাতুটিকে একটি অভিজাত ধাতু ও বলা হয়। যেখানে এই বস্তুটি ক্ষয়-রোধী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে সোনা ও রূপার ক্ষয়রোধ কারী হিসেবে এটির প্রলেপ ব্যবহার করা হয়। Rhodium বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই Luxury গাড়ির ইঞ্জিন বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা ইঞ্জিনের মধ্যে কার্বনের উৎপাদন কে আটকায়। এর এত বেশি দামের জন্যই লাক্সারি গাড়ির দাম বেশি হয়।

Rhodium এর এক গ্রামের দাম ৪৩০.৮২ ডলার, যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩৭ হাজার টাকা।

৫. Plutonium

Plutonium

প্লুটোনিয়ামের একটি তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক উপাদান। প্লুটোনিয়াম যেকোন পরমাণু বোমা তৈরি করার জন্য সবথেকে অপরিহার্য একটি বস্তু। অতএব আপনি বুঝতেই পারছেন যে, সারা পৃথিবীর বৈজ্ঞানিক যে পদার্থের পেছনে পাগল, তার দাম কত বেশিই না হতে পারে। প্লুটোনিয়াম এর এক গ্রামের দাম প্রায় তিন লক্ষ টাকা।

এবার আপনি যদি প্লুটোনিয়াম কে সোনার দামের সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে আমরা দেখতে পাই যে, এটা সোনার থেকে প্রায় ১০০ গুণ বেশি দামি বস্তু।

৬. Diamond

Diamond

Diamond এর ব্যাপারে তো আমরা সবাই জানি। বিলাসবহুল দামি গহনা বা অলংকার হিসেবে আমরা ডায়মন্ড কে চিনে থাকি। এছাড়া আমাদের অনেকের কাছে সোনার থেকেও অনেক বেশি পছন্দের জিনিস এই ডায়মন্ড। এই পাথরের এক গ্রামের দাম ৮ লক্ষ টাকার থেকেও বেশি। ডায়মন্ডকে মূলত ক্যারেট হিসেবে বিক্রি করা হয়।

আপনার জানার জন্য বলি, এক ক্যারেট মানে ০.২ গ্রাম। তাহলে এবার আপনি বুঝতে পারছেন যে, ডায়মন্ড কতটা দামি।

৭. Tritium

Tritium

ট্রিটিয়াম এটা একটা রেডিও অ্যাকটিভ ম্যাটেরিয়াল। এটি অত্যন্ত তেজস্ক্রিয় একটি পর্দাথ। যেকারণে এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানির মিশ্রণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। থিয়েটার, স্কুল, হসপিটাল ইত্যাদি জায়গায় Exit সাইন তৈরি করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই সাইন এর বিশেষ ব্যাপার এটা হয়, এটা যেকোনো পরিস্থিতিতে সবুজ আলোর মতো উজ্জ্বল হয়ে থাকে। ট্রিটিয়াম পদার্থটির এক গ্রামের দাম প্রায় বিশ লক্ষ টাকা।

যেখানে এই পদার্থটির দাম সোনার দামের সঙ্গে যদি তুলনা করা যায়, তাহলে এটা স্বর্ণের থেকে প্রায় ৯০০ গুণ বেশি দামি হবে।

তো বন্ধুরা, আজকের এই টিউনটি কেমন লাগলো, সেটি অবশ্যই টিউনমেন্ট করে জানাবেন। আর টিউনটি তে একটা লাইক দিতে অবশ্যই ভুলবেন না। আর সেই-সঙ্গে আপনি যদি আমার টিউনে নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আমাকে ফলো করে রাখবেন। আর আপনি যদি ইতিমধ্যেই আমাকে ফলো করে থাকেন, তাহলে আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

আজকে এই পর্যন্তই, আবার দেখা হবে পরের কোন টিউনে ইনশাআল্লাহ, ততক্ষণ পর্যন্ত আমার অন্যান্য টিউন গুলোর মধ্য থেকে যেকোন টিউন দেখতে পারেন। আসসালামু আলাইকুম। ধন্যবাদ



Source link

  • Related Posts

    কেন স্যামসাং চীনে ফোন বিক্রি করে না? | Techtunes

    বর্তমান বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড স্যামসাং। বিশ্বে মোট বিক্রিত স্মার্টফোন এর সবচাইতে বেশি জায়গা জুড়ে রয়েছে স্যামসাংয়ের ফোনগুলো। Samsung বিশ্বজুড়ে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করলেও, চীনে তাদের মার্কেট শেয়ার মাত্র…

    TikTok Shop কী? টিকটক শপ থেকে কেনাকাটা করা কী নিরাপদ? | Techtunes

    বর্তমান সময়ে আমরা সকলেই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে TikTok অ্যাপ এর সাথে পরিচিত। যেখানে, কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ক্রিয়েটিভ ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে। তবে, টিকটক ভিডিও থেকে…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *