বন্ধুরা আশাকরি সকলেই ভাল আছেন। কম বাজেটের মধ্যে আপনারা যখন কোন এন্ট্রি লেভেলের ফোন কেনেন তখন সেটি নতুন অবস্থায় অনেক ভালো পারফর্ম করলেও কিছুদিন যাওয়ার পর এর পারফর্মেন্স কমতে শুরু করে। আজকে আমি আপনাদেরকে কয়েকটি টিপস বলবো যার মাধ্যমে আপনার ফোনটি স্লো হওয়া থেকে বাঁচাতে পারবেন। আর যদি স্লো হয়েও যায় তবে আবার আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে পারবেন।
কম বাজেটের ফোনগুলোতে কম দামি প্রসেসর এবং হার্ডওয়্যার সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। যার ফলে কিন্তু কিছুদিন পরেই সেই ফোনগুলো স্লো হয়ে যায়। আপনি যদি কিছু কৌশল অনুসরণ করেন তবে আপনার মোবাইল আগের চাইতে অনেকটাই ফাস্ট হবে। চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক এরকমই কয়েকটি বিষয়।
প্রথমেই আপনাদের কয়েকটি সেটিং দেখাবো যার মাধ্যমে আপনার ফোনটি আগের চাইতে অনেক বেশি দ্রুত হবে। যে সেটিং গুলো আপনারা সব স্মার্টফোনেই পেয়ে যাবেন।
১. এজন্য আপনাকে চলে যেতে হবে আপনার মোবাইলের সেটিং এ।
২. এরপর System setting থেকে Developer option এ।
৩. আপনি যদি Developer option এখানে না পান, তবে About phone এ গিয়ে Build number তে ৫ থেকে ৭ বার ঘন ঘন ট্যাপ করুন। তাহলেই Developer option চালু হয়ে যাবে।
৪. এরপর আপনি পিছনে এসে আবার Developer option এ ক্লিক করুন।
৫. এরপর উপরের Developer option সেটিং টি বন্ধ করা থাকলে চালু করে দিন।
৬. এরপর একটু নিচে থেকে খুঁজে নিন Window animation scale, Transition animation scale, Animator duration scale এই তিনটি সেটিং।
৭. এরপর একেকটির উপর ক্লিক করে Animation scale.5x করে দিন। এভাবে তিনটিতেই.5x করে দিন।
৮. এরপর আরো একটু নিচে চলে আসলে দেখতে পাবেন Bacground process limit আপনি এখানে ক্লিক করুন। এরপরর Standard limit থেকে No bacground processes সিলেক্ট করে দিন। এর ফলে আপনার মোবাইলে background এ কোনো ডাটা প্রসেস হবে হবে এবং আপনার ফোন দ্রুত কাজ করবে।
এখন চলে আসি কয়েকটি টিপস এর ব্যাপারে। যেসব অনুসরণ করলেও আপনার ফোন অনেকটা ফাস্ট হবে।
Internal storage সবসময় ফাঁকা রাখা এবং ভালো মানের SD card ব্যবহার করা
অধিকাংশ লোকই যে ভুলটি করে সেটি হলো তার মোবাইলের ইন্টারনাল মেমোরির জায়গা ভরে রাখে। এতে করে কিন্তু আপনার মোবাইলের পারফরম্যান্স অনেকাংশেই কমে যায়। তাই আপনি চেষ্টা করবেন সবসময় আপনার মোবাইলের ফোন মেমোরি ফাঁকা রাখতে।
আপনার মোবাইলের ভালো কর্মদক্ষতার জন্য আপনি একটি এসডি কার্ড কিনে নিতে পারেন। আপনি যদি আপনার মোবাইলের ফোন মেমোরি ফাঁকা রাখতে পারেন, তাহলে আপনার মোবাইলের কর্মদক্ষতা আগের চাইতে অনেকটা ভালো হবে।
বিভিন্ন cleaner অ্যাপ ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকুন
ফোন স্লো হলে সবার আগে যে ভুলটি অনেকেই করে থাকে সেটি হলো প্লে স্টোর থেকে ক্লিনার অ্যাপ ইনস্টল করেন। এর ফলে কিন্তু সেই মোবাইলটি আরো স্লো হয়। দেখা যায় যে, অ্যাপটি ওপেন করার পর এড আসতে থাকে। তবে কিছু অ্যাপ দিয়ে অবশ্যই মোবাইলের junk file সহ অপ্রয়োজনীয় ফাইল সমূহ ডিলিট করা যায়। এজন্য আপনি Phone master অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন।
Lite অ্যাপগুলো ব্যবহার করা
আপনার মোবাইল যদি অনেক স্লো হয়ে যায় তবে আপনি lite অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারেন। যেমনঃ Facebook lite, Instagram lite, tiktok lite ইত্যাদি অ্যাপগুলোর lite ভার্সন। এতে করে আপনার মোবাইল আগের চাইতে অনেক ভালো পারফর্ম করবে।
অফিসিয়াল অ্যাপ এবং lite অ্যাপগুলোর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায় না। lite ভার্সনের অ্যাপগুলো দিয়েও সব কাজ করা যায় অফিসিয়াল অ্যাপের মতো। তাই আপনার মোবাইলের ভালো পারফর্মেন্স পেতে অবশ্যই অফিশিয়াল অ্যাপ ব্যবহার বাদ দিয়ে lite অ্যাপগুলো ব্যবহার করুন।
শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপগুলোর ব্যবহার করুন
অনেককেই দেখা যায় তাদের মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় অনেক অ্যাপ ইনস্টল করে রেখে দেয়, যেসব অ্যাপ তার প্রতিদিন ব্যবহারের দরকার পড়ে না। যার ফলে ইনস্টল করা অ্যাপ আপনার মোবাইলের অতিরিক্ত র্যাম দখল করে এবং আপনার মোবাইলকে স্লো করে দেয়। তাই আপনার মোবাইল স্লো হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে অবশ্যই অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো আনইন্সটল করে ফেলুন।
অ্যাপ আপডেট করার বদলে আনইন্সটল করে আবার ডাউনলোড করা
আপনার মোবাইল স্লো হলে কখনোই অ্যাপ আপডেট করবেন না। বরং সেই অ্যাপটি আনইন্সটল করে আবার নতুন করে ডাউনলোড করে ইনস্টল করবেন। এতে করে আপনার মোবাইল হ্যাং হওয়ার সম্ভাবনা থেকে বাঁচবে।
অন্যদিকে আপনার মোবাইল অবশ্যই আপডেট করে নিবেন। এতে করে মোবাইলের সিস্টেমে কোনো ত্রুটি থাকলে তা সমাধান হয়ে যাবে।
Fectory reset এর মধ্যমে মোবাইলের সকল সমস্যার সমাধান
আপনার মোবাইলের সমস্যা যদি একেবারেই অনেক বেশি হয় তবে আপনি মোবাইলটিকে factory reset করতে পারেন। এতে করে আপনার মোবাইলের যত সমস্যা আছে সেসব একেবারেই দূর হয়ে যাবে। আপনার মোবাইলটি আবার আগের মতো হয়ে যাবে।
তবে মোবাইলটি factory reset দেওয়ার আগে ফোন মেমোরিতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, ভিডিও কিংবা অডিও থাকলে তা অবশ্যই অন্য কোথাও সংরক্ষণ করে নিবেন। আর তা না হলে সমস্ত ফাইলগুলো ডিলিট হয়ে যাবে।
বন্ধুরা এই ছিল মোবাইল স্লো হওয়া থেকে বাঁচানোর কয়েকটি টিপস। আশা করছি টিউনটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ