![](https://flyenceragency.com/wp-content/uploads/2024/05/techtunes_1fe3fb57a84006f1653c8f19802ad41d.png)
বাচ্চাদের হাতে মোবাইল বা যে কোনো ডিজিটাল ডিভাইস দেখলেই আমাদের সচেতন সমাজ আতঙ্কিত হয়ে যায়। এই বুঝি বাচ্চাটি বিগড়ে গেল। তার শারিরীক ও মানসিক ক্ষতি হয়ে গেল। কিন্তু মোবাইল হাতে নিলেই যে বাচ্চা বিগড়ে যাবে এমনটা কিন্তু না। নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মোবাইল ব্যবহার করলে শিশুদের ক্ষতি নয় বরং কিছুটা উপকার হতে পারে।
বর্তমান যুগটাই হলো প্রযুক্তির যুগ। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও বেশি অগ্রসর হবে। ধারনা করা হয় পৃথিবীর অর্থনীতির সিংহভাগ নির্ভর করবে এই ডিজিটাল প্রযুক্তির ওপর। আর আমরা যদি আমাদের বাচ্চাদের এই ডিজিটাল প্রযুক্তির থেকে দূরে সরিয়ে রাখি তাহলে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে তারা পদে পদে ধাক্কা খাবে। এদিক থেকে বিবেচনা করলে বলা যায় বাচ্চাদের ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে।
শুনতে একটু অদ্ভুত লাগলেও এটা বাস্তব যে, বাচ্চাদের পুরোপুরিভাবে মোবাইল বা ডিজিটাল ডিভাইস থেকে দূরে সরিয়ে রাখা উচিত না। এটাও যে বর্তমান সময়ে মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ তা নতুন এই প্রজন্মকে বুঝতে দিতে হবে৷ এর ভালো দিকগুলো সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক ঠিক কী কী কারণে আপনার বাচ্চাকে দৈনিক অল্প সময়ের জন্য হলেও মোবাইল ব্যবহার করতে দিবেন।
১. মোবাইল শিশুদেরকে বিশ্বজগত সম্পর্কে জানতে সহায়তা করবে
এখন হাতে একটি স্মার্টফোন আছে মানেই পুরো দুনিয়া আপনার হাতের মুঠোয়। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে বসে সুদূর সাইবেরিয়া ও মরুভূমির পরিবেশ কেমন তা আপনার বাচ্চা জানতে পারবে। সৌরজগতের গঠন, সমুদ্র তলদেশের পরিবেশ থেকে শুরু করে অজানা সকল বিষয় সম্পর্কে আপনি আপনার বাচ্চাকে অবগত করতে পারবেন। ফলে তার বাস্তব জ্ঞান আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের থেকে বেশি হবে। পৃথিবীটা যে তার চারপাশের এতোটুকু পরিবেশেই সীমাবদ্ধ নয় তা বাচ্চাটি বুঝতে পারবে।
এই বিষয়গুলো শেখানোর জন্য কিন্তু আপনার অবদান থাকতে হবে। ইন্টারনেট থেকে বেছে বেছে এই শিক্ষামূলক ভিডিও গুলো বাচ্চার সামনে প্লে করে দিতে হবে। বাচ্চাকে তার ইচ্ছামতো মোবাইল ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না। অর্থাৎ আপনার বাচ্চা যতোক্ষণ স্ক্রিন টাইমের ওপরে থাকবে ততোক্ষণ আপনাকেও তার কাছাকাছি থাকতে হবে। আসলে যে কোনো বিষয় বাচ্চা ভালোভাবে নিবে নাকি খারাপ ভাবে তার পুরোটাই নির্ভর করে তার অভিভাবক এর ওপর।
২. টেকনিক্যাল বিষয়বস্তু সম্পর্কে ছোটবেলা থেকেই ভাবতে শুরু করবে
একটু ক্রিয়েটিভ শিশুরা কোনো কিছু ব্যবহার করার সময় কিন্তু সেটিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে। যেমন ধরুন আপনি তাকে একটি গাড়ি কিনে দিলেন। একটু খেয়াল করলে দেখবেন আপনার বাচ্চা উদঘাটন করার চেষ্টা করছে যে গাড়িটি আসলে কীভাবে চলে, কীভাবে এটি তৈরি করা হয়েছে। ঠিক তেমনই যখন ওর হাতে আপনি ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দিবেন তখনও সে এটির ভেতরগত বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। অল্প বয়স থেকেই টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে ভাবতে শুরু করবে।
যদি এই ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস থেকে আমরা আমাদের সন্তানদের দূরে সরিয়ে রাখি তাহলে তো ওরা ডিজিটাল ডিভাইস এর সাথে পরিচিত হতেই পারবে না৷ আর অপরিচিত বিষয় নিয়ে বাচ্চাদের চিন্তা ভাবনা করার তো কোনো প্রশ্নই আসে না। তাই ওকে মুক্তভাবে ডিজিটাল ডিভাইস এর সাথে পরিচিত হতে দিন। দেখা যাবে টেকনিক্যাল বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে করতে সে নিজেই নতুন কিছু উদ্ভাবন করে ফেলেছে।
৩. শিশুর ভাষাগত দক্ষতার উন্নতি ঘটবে
আমরা বাড়িতে যখন কথা বলি তখন শত চেষ্টা করলেও কথার মধ্যে কিন্তু কিছুটা আঞ্চলিকতা চলে আসে। শিশুদের শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণের চর্চা সেরকম ভাবে করানো হয় না বললেই চলে। কিন্তু মোবাইলে যে বাংলা কার্টুন ভিডিও বা শিক্ষামূলক শিশুতোষ বাংলা কনটেন্ট বাচ্চারা দেখে সেখানে শতভাগ শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ থাকে। আর বাচ্চারা তো বরাবরই অনুকরণ প্রিয়। তারা ঐ মোবাইলে শুনে শুনে অনেক নতুন নতুন বাংলা শব্দ শিখে ফেলে এবং শুদ্ধ বাংলায় উচ্চারণ করতে পারে।
আপনি নিয়মিত ৩০ মিনিট করে শুদ্ধ বাংলা ভাষার কনটেন্ট আপনার শিশুকে দেখতে দিন। কয়েকদিন এর মধ্যে পরিবর্তন টা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন৷ দেখবেন আপনার শিশুর কথা বলার ধরনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে ওরা যখন সমবয়সীদের সাথে খেলাধুলা করে ঠিক তখন একটু খেয়াল করে দেখবেন ওরা ঐ মোবাইল এর মতো করে শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলে।
তবে মোবাইল দেয়ার সময় নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার সন্তান শিক্ষামূলক এবং মানসম্মত বাংলা কনটেন্ট দেখছে৷ সাথে দুএকটা করে ইংরেজি শিক্ষামূলক ভিডিও দেখতে দিতে পারেন৷ এতে করে শিশুর ইংরেজি ভাষার প্রতিও একটা আগ্রহ ও ভালোবাসা জন্মাবে। তবে বিদেশী ভাষায় নিয়মিত কার্টুন দেখার অভ্যাস যাতে গড়ে না ওঠে সেদিকে কড়া নজরদারি রাখতে হবে।
৪. শিক্ষাক্ষেত্রে মোবাইল সহায়ক ভূমিকা পালন করে
ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়াশোনার শুরুটা হতে পারে ডিজিটাল ডিভাইস এর মাধ্যমে। এতে করে তারা আনন্দের সাথে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারবে। যেমন বাংলা ছড়া, কবিতা, গল্প নিয়ে অনেক চমৎকার সব ভিডিও কনটেন্ট ইন্টারনেটে রয়েছে। এই ধরনের কনটেন্ট দেখে বাচ্চার চমৎকার সব ছড়া, কবিতা শিখতে পারে। তাছাড়া হাতের লেখা চর্চার জন্যও বিভিন্ন মোবাইল App রয়েছে।
একাডেমির পড়াশোনার ক্ষেত্রেও মোবাইল এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন ভিডিও ক্লাস, অনলাইন প্রাইভেট ক্লাস, বিভিন্ন স্বনামধন্য শিক্ষকের সাজেশন এগুলো বাচ্চারা মোবাইল এর মাধ্যমেই পেয়ে থাকে। তাই পড়াশোনায় সহায়ক হিসেবে বাচ্চাদের হাতে মোবাইল দেয়া যেতে পারে। তবে সারাদিন মোবাইল দিয়ে রাখা চলবে না। আর যতোক্ষণ বাচ্চার পড়াশোনায় মোবাইল ব্যবহার চলবে ততোক্ষণই অবশ্যই অভিভাবককে বাচ্চার পাশে থাকতে হবে। এটা সম্ভব না হলে বাচ্চাদের হাতে মোবাইল দেয়াই অনুচিত।
৫. মোবাইল বাচ্চাদের বিনোদনের মাধ্যম হতে পারে
বর্তমান শহুরে জীবনে প্রায় প্রতিটি পরিবারের শিশু বন্দী জীবন কাটাচ্ছে। না আছে খেলার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা আর না আছে খেলার সঙ্গী। এমতাবস্থায় শিশুরা নিষঙ্গ ও আনন্দহীন জীবনযাপন করছে। তাই তাদের নিষঙ্গ জীবনে কিছুটা বিনোদন দিতে অল্প সময়ের জন্য হলেও ডিজিটাল ডিভাইস দেয়া যেতে পারে। তবে খাওয়ার সময় মোবাইল, ঘুমানোর সময় মেবাইল, ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল এমনটা যাতে না হয় সেদিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে।
দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় থাকবে যে সময়টাতে আপনি বাচ্চাকে ৩০ মিনিট বা ৪০ মিনিটের জন্য মোবাইল হাতে দিবেন। এই নিয়মে তাকে অভ্যস্ত করে ফেলতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে এই নিয়মের বাইরে কখনোই যাওয়া যাবে না। এই সময়টুকুতে শিক্ষামূলক কার্টুন ভিডিও কিংবা গেইম খেলতে দিতে পারেন। এতে করে বাচ্চার মনের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে এবং পুনরায় সে তার দৈনন্দিন কাজ কিংবা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারবে।
৬. বাচ্চার সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
বাচ্চারা যতো দেখবে, যতো জানবে ততোই শিখবে। প্রতিদিন অল্প কিছু সময় মোবাইলে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ভিডিও দেখলে সে অনেক নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবে৷ নতুন নতুন শব্দ তার ভোকাবুলারিতে যুক্ত হতে থাকবে। নতুন নতুন কাজ সম্পর্কে সে অবগত হতে পারবে। এর মাধ্যমে শিশুর সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটবে৷
চার দেয়ালের গন্ডির মধ্যে বদ্ধ পরিবেশ থেকে শিশুর শেখার কিছু নেই। তাই সে ভার্চুয়াল জগতের মাধ্যমে অনেক কিছুই শিখতে পারে৷ হয়তো রং তুলির প্রতি তার আকর্ষণ তৈরি হতে পারে, গানের প্রতি আগ্রহ জন্মাতে পারে, কিংবা নতুন কোনো খেলা সম্পর্কে জানতে পারে৷ এভাবে আপনার শিশুর জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে। আর ধীরে ধীরে আপনার শিশু সৃজনশীল হয়ে উঠতে থাকবে।
৭. মোবাইল আপনার সন্তানকে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে পারে
ইউটিউব কিডস এর বেশিরভাগ বাংলা কার্টুন এখন মোরাল স্টোরি থেকে তৈরি করা হয়। এই ভিডিও গুলোতে গল্পচ্ছলে ভালো কাজ, নৈতিকতা সম্পর্কে শিক্ষা দিয়ে থাকে। তাই এই ধরনের কার্টুন ভিডিও দেখলে আপনার শিশুর মধ্যে নৈতিকতার বিকাশ ঘটবে। ভালো কাজ করার প্রতি বাচ্চার আগ্রহ জন্মাবে৷ তাই যতোটুকু সময় বিনোদনের জন্য বাচ্চাকে মোবাইল হাতে দিবেন ঐ সময়টুকুতে এমন একটি মোরাল স্টোরি সম্বলিত কার্টুন ভিডিও প্লে করে দিতে পারেন।
তাছাড়া বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত অনেক ইসলামিক গজল, এবাদতরত বাচ্চাদের ভিডিও, কুরআন তিলাওয়াত ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। এই ধরনের কনটেন্ট দেখলে বাচ্চাদের নৈতিক শিক্ষা আরও বেশি সমৃদ্ধ হবে।
৮. ভবিষ্যতৎ প্রজন্মের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবে
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে পুরোপুরি ডিজিটাল ডিভাইস নির্ভর। সে যুগে যার টেকনিক্যাল দক্ষতা যতো বেশি হবে সে ততোটাই স্মার্ট বলে বিবেচিত হবে। তাই এখন থেকেই বাচ্চারা ডিজিটাল ডিভাইস পরিচালনায় অভ্যস্ত না হলে ভবিষ্যতের প্রতিযোগীতামূলক পরিবেশে তারা নিজেকে খাপ খায়িয়ে নিতে পারবে না। ফলে অন্যদের তুনলায় আপনার বাচ্চা কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়বে। তাই এখন থেকেই বাচ্চাকে টুকটাক ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহার করতে শেখান।
শুধু খেয়াল রাখবেন আপনার বাচ্চা যেন ডিজিটাল প্রযুক্তির ভালো দিকগুলো সম্পর্কেই অবগত হয়। ব্লাক দুনিয়ায় প্রবেশ করার বিষয়ে কড়া নজরদারি রাখতে হবে।
মোটকথা প্রযুক্তির এই দুনিয়ায় আপনার সন্তানকে কয়েক ধাপ এগিয়ে রাখতে চাইলে এখন থেকেই তাকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। অভ্যস্ত করে তুলুন যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য।
কেন বাচ্চারা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে?
বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তির পেছনে সবথেকে বেশি দায়ী তার পিতামাতা কিংবা অভিভাবক। নিজের কাজকে সহজ করতে বাচ্চাকে দিনরাত স্ক্রিনের সামনে বসিয়ে রাখলে বাচ্চা তো আসক্ত হয়ে পড়বেই। খাওয়ার সময় বায়না ধরলে মোবাইল ধরিয়ে দিয়ে খুব দ্রুত খাবার শেষ করতে চায় মা। ফলে সময় বেঁচে যায় তার। কিন্তু এমনি করেই যে শিশুটি মারাত্মক ভাবে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে সেদিকে তার ভ্রূক্ষেপ নেই।
পড়তে বসতে চাইছে না, শর্ত দেয়া হলো পড়ার শেষেই তাকে মোবাইল দেয়া হবে৷ অমনি কোনো মতে পড়া শেষ করেই ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল নিয়ে বসে আছে বাচ্চা। মা-ও তার মতো সিরিয়াল দেখছে বা নিজের কাজ করছে। এদিকে বাচ্চা মোবাইল নিয়ে কী করছে তার খোঁজ রাখছেন না একদমই। বাবা মা মোবাইল ব্যবহার করার সময় বাচ্চা ডিসটার্ব করছে। তাই বাচ্চার জন্য আলাটা একটি ট্যাব কেনা হলো, এবার পরিবার সহ সবাই একত্রে বসে স্ক্রিন টাইম পাড় করছে।
এভাবেই সারাক্ষণ হাতের নাগালে ডিজিটাল ডিভাইস এর সহজলভ্যতার কারনে বর্তমানে প্রায় প্রতিটি পরিবারের শিশু ডিজিটাল ডিভাইস এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। বর্তমান সময়ে এটি খুবই মারাত্মক একটি সমস্যায় পরিনত হয়েছে।
কীভাবে শিশুদের মোবাইল আসক্তি থেকে রক্ষা করবেন?
প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখবেন মোবাইল ব্যবহারের জন্য। ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র এক ঘন্টা সময়ের জন্য বাচ্চাদের হাতে মোবাইল তুলে দেবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে একটানা এক ঘন্টা মোবাইল ব্যবহার করলেও শিশুরা আসক্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই সময় ভাগ করে প্রতিবার ২০ মিনিট করে দিনে তিনবার বাচ্চাকে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ দিন৷ তাকে বোঝাবেন যে এটাই নিয়ম, এই নিয়মের বাইরে গেলে তাকে পুরোপুরি ভাবে মোবাইল ব্যবহার থেকে বঞ্চিত করা হবে।
খাবার তাড়াতাড়ি শেষ করার জন্য বাচ্চার হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেবেন না। বরং বাচ্চাকে সময় নিয়ে নিজে নিজে খাওয়ার অভ্যাস করান। নিজের হাতে খেলে বাচ্চার খাবারের প্রতি একটা আকর্ষণ অনুভব করবে। যদি সময় ও পরিবেশ নষ্ট হয় তো হোক। বাচ্চার সুন্দর অভ্যাস এর জন্য এতোটুকু তো করতেই পারেন।
নিজে অন্য কোনো কাজ করার সময় বাচ্চাকে মোবাইল দিয়ে ব্যস্ত রাখবেন না। বরং তাকে ক্রিয়েটিভ কোনো কাজে ব্যস্ত রাখুন। যেমন: ছবি আঁকতে দিন, ছবির বই দেখতে দিন কিংবা অন্য কোনো খেলনা দিয়ে খেলতে দিন৷ অবসর মানেই যে মোবাইল ব্যবহার করতে হবে এমন চিন্তা ভাবনা শিশুর মাথায় ঢুকতেই দেয়া যাবে না। পাশাপাশি নিজেরাও বাচ্চার সামনে মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
মোটকথা অভিভাবক সচেতন থাকলে বাচ্চারা কখনোই ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি আসক্ত হতে পারে না। আপনি চাইলেই আপনার বাচ্চাকে নিয়মের ভেতর নিয়ে আসতে পারবেন।
শেষকথা
আশাকরি এখন থেকে কোনো বাচ্চার হাতে মোবাইল দেখলেই তা নেগেটিভ ভাবে নিবেন না। বরং নিজের বাচ্চাকে নতুন প্রজন্মের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অভ্যস্ত করে তুলুন। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলাটা এখন বুদ্ধিমানের কাজ। নয়তো আপনার শিশুকে আপনি সেচ্ছায় কয়েক যুগ পেছনে ফেলে রাখবেন।
টিউনটি ভালো লাগলে একটি জোসস করতে ভুলবেন না। কোনো মন্তব্য থাকলে অবশ্যই টিউনমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।