কনটেন্ট তৈরির জন্য টপিক খুঁজে পাচ্ছেন না? ফলো করুন এই ৬ টি টিপস! | Techtunes


বর্তমান জেনারেশন এর প্রায় বেশিরভাগ মানুষই ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে একজন সফল কনটেন্ট ক্রিয়েটর হওয়ার চেষ্টা করছে। হতে পারে সেটা ভিডিও কনটেন্ট, অডিও কনটেন্ট কিংবা টেক্সট কনটেন্ট। তবে যে কোনো কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে দর্শকের টাইমলাইনে টিকে থাকার জন্য নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি করতে হয়৷ নিয়মিত নতুন নতুন টপিক খুঁজে বের করে আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করতে হয়৷ নতুন অবস্থায় একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর অনেক বেশি কনটেন্ট আইডিয়া খুঁজে পায়, কিন্তু একটা সময় পরে কনটেন্ট এর জন্য টপিক খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল হয়ে ওঠে।

যারা নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি করেন বা কনটেন্ট লেখেন তারা এই সমস্যাটি খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারছেন। কিন্তু তাই বলে তো আর বসে থাকা যাবে না। যে কোনো উপায়ে নতুন নতুন কনটেন্ট তৈরির জন্য টপিক খুঁজে বের করতেই হবে। দেখা যায় উপযুক্ত টপিক খুঁজতে খুঁজতেই অনেক সময় ব্যয় হয়ে যায় আমাদের। এখানে আমি ৬ টি টিপস শেয়ার করছি যা ফলো করলে আপনি নিয়মিত নতুন নতুন কনটেন্ট টপিক খুঁজে পেতে পারেন। তাহলে চলুন দেরি না করে কনটেন্ট টপিক খুঁজে বের করার টিপস গুলো জেনে নেয়া যাক।

১. ChatGpt এর সহায়তা নিন

ChatGpt এর সহায়তা নিন

ChatGpt বা ওপেন এআই এর সাহায্য নিয়ে আপনি খুব সহজেই আপনার কনটেন্ট এর জন্য বিষয়বস্তু খুঁজে বের করতে পারবেন। এজন্য ChatGpt এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সরাসরি টপিক সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন। ধরুন আপনি টেকনিক্যাল কনটেন্ট তৈরি করেন। সেক্ষেত্রে আপনি ChatGpt কে বলতে পারেন, “টেকনিক্যাল ভিডিও তৈরির জন্য অথবা টেকনিক্যাল কনটেন্ট লেখার জন্য ১০ টি কনটেন্ট টপিক চাই”। ChatGpt সাথে সাথে আপনাকে ১০ টি টপিক বা আইডিয়া প্রদান করবে।

এভাবে আপনি যে বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন ঐ বিষয় উল্লেখ করে ChatGpt কে নির্দেশনা দিলেই হবে। এভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে আপনি আইডিয়া গ্রহন করতে পারেন। সুতরাং আপনাকে চিন্তা ভাবনা করে কনটেন্ট তৈরির জন্য টপিক খুঁজে বের করতে হবে না। বিষয়টি আসলেই খুব কার্যকরী এবং সহায়ক।

২. সমসাময়িক কনটেন্ট ক্রিয়েটর কে ফলো করুন

সমসাময়িক কনটেন্ট ক্রিয়েটর কে ফলো করুন

আপনি যে বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দিয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন সেই একই সেক্টরে অন্যান্য কনটেন্ট ক্রিয়েটর রয়েছে। একটু ঘাটাঘাটি করলেই একই ক্যাটাগরির অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর আপনি খুঁজে পাবেন। তাদের কনটেন্ট গুলো দেখে আপনি আইডিয়া সংগ্রহ করতে পারেন। এবং ঐ আইডিয়া কাজে লাগিয়ে আপনি আরও নতুন নতুন কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন। মনে রাখবেন অন্য কনটেন্ট ক্রিয়েটর দের সরাসরি ফলো না করে একই বিষয় নতুন ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

সবথেকে বড় কথা হলো, আপনি অন্যান্য কনটেন্ট ক্রিয়েটর দের কনটেন্ট এর মধ্যে কী কী গ্যাপ আছে তা খুঁজে বের করবেন। আপনার কনটেন্টে ঐ গ্যাপ গুলো পরিপূর্ণ করার চেষ্টা করবেন। ফলে আপনার কনটেন্ট তুলনামূলক বেশি জনপ্রিয়তা পাবে। আবার হয়তো একজন ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে আর আপনি টেক্সট কনটেন্ট। সেক্ষেত্রে ঐ ভিডিও কনটেন্ট থেকে আইডিয়া নিয়ে আপনি সেটিকে টেক্সট কনটেন্টে রূপান্তর করতে পারবেন৷

মোটকথা আপনার মূল লক্ষ হলো আইডিয়া সংগ্রহ করা। আপনি যে কোনো উপায়ে যে কারো কনটেন্ট থেকে আইডিয়া সংগ্রহ করতে পারবেন৷ তারপর ঐ বিষয়ের ওপর বিস্তর রিসার্চ করে নতুনভাবে বিষয়টিকে পুনরায় উপস্থাপন করতে পারেন। তবে কোনো ভাবেই অন্যের কনটেন্ট হুবহু কপি করা যাবে না।

৩. আপনার কনটেন্ট রিলেটেড ফেসবুক গ্রপে যুক্ত থাকুন

আপনার কনটেন্ট রিলেটেড ফেসবুক গ্রপে যুক্ত থাকুন

ফেসবুকে এখন আলাদা আলাদা বিষয়বস্তুর জন্য আলাদা আলাদা অনেক গ্রুপ তৈরি হয়েছে। আপনি আপনার কনটেন্ট ক্যাটাগরি অনুযায়ী ফেসবুক গ্রুপ খুঁজে বের করুন। এতে করে আপনার কনটেন্ট এর বিষয় সম্পর্কে আরও বিস্তর ধারনা তৈরি হবে সেই সাথে নতুন নতুন আইডিয়া সংগ্রহ করতে পারবেন। ধরুন আপনি খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক ক্যাটাগরিতে কনটেন্ট তৈরি করেন। তাহলে খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কিত একটি বা একাধিক ফেসবুক গ্রুপে আপনি যুক্ত হয়ে থাকতে পারেন।

প্রতিদিন গ্রুপে কমপক্ষে ৩০ মিনিট সময় নিয়ে অন্যদের টিউন গুলো পড়ার অভ্যাস করুন। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন পাবলিক মূলত কী কী বিষয়ের ওপর তথ্য জানতে চায়। দর্শক বা পাঠকের মাইন্ড রিডিং করার একটি চমৎকার উপায় হলো তাদের পাবলিক টিউন গুলো নিয়ে রিসার্চ করা। এরপর আইডিয়া অনুযায়ী পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করে আপনি আপনার কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন। সুতরাং আপনার কনটেন্ট ক্যাটাগরি অনুযায়ী ফেসবুক গ্রুপ খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন আজই।

৪. গুগল সার্চ করুন

গুগল সার্চ করুন

গুগলে সার্চ করে আপনি সবথেকে কার্যকরী কনটেন্ট টপিক খুঁজে বের করতে পারবেন। কেননা গুগলে একটা মাত্র শব্দ সার্চ বারে লিখলে সেই শব্দের সাথে রিলেটেড আরও অনেক টপিক অটোমেটিক ভাবে চলে আসে। এখান থেকে আপনি আইডিয়া সংগ্রহ করতে পারবেন। তাছাড়া গুগলে কোনো বিষয় লিখে সরাসরি সার্চ করলে ঐ টপিকের কনটেন্ট তো আসবেই, সেই সাথে রিলেটেড আরও অন্যান্য টপিক আসবে। এখান থেকে আপনি একাধিক কনটেন্ট টপিক খুঁজে বের করতে পারবেন।

ধরুন আপনি ভ্রমণ বিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করেন। এখন আপনি গুগলের সার্চ বারে যদি ‘ভ্রমণ’ কথাটি লিখে সার্চ করেন তাহলে অনেক নতুন নতুন টপিক সাজেস্ট করা হবে। যেমন: চট্টগ্রাম ভ্রমণ, কক্সবাজার ভ্রমণ, জাফলং ভ্রমণ ইত্যাদি। এই যে শুধুমাত্র একটা শব্দ দিয়ে অনেকগুলো টপিক পেয়ে গেলেন তার জন্য আপনাকে কিন্তু কোনো মানসিক কসরত করতে হয়নি। এভাবে সরাসরি সার্চ করলেও অনেক নতুন নতুন ভ্রমণ বিষয়ক টপিক আপনার সামনে চলে আসবে।

মোটকথা আপনি যে সেক্টরে কনটেন্ট তৈরি করতে চান সেই সেক্টরে যে কোনো একটি ওয়ার্ড লিখে সার্চ করলেই ঐ টপিক রিলেটেড অনেক নতুন নতুন আইডিয়া চলে আসবে। এভাবেই নিয়মিত আপনি আপনার কনটেন্ট এর জন্য টপিক খুঁজে বের করতে পারবেন।

৫. দর্শকদের মন্তব্য থেকে আইডিয়া সংগ্রহ করুন

দর্শকদের মন্তব্য থেকে আইডিয়া সংগ্রহ করুন

আপনি নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করলে আপনার মোটামুটি পরিমাণে দর্শক তো থাকবেই। তারা নিয়মিত আপনার ভিডিও দেখে কিংবা লেখা পড়ে আপনার কনটেন্টে মন্তব্য করতে পারে। আপনি তাদের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিবেন যে তারা কোন ধরনের কনটেন্ট এরপরে পেতে চায়। এক একজন একেক রকম আইডিয়া প্রদান করবে। এভাবে আপনি দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন।

তবে একদম শুরুর দিকে হয়তো মন্তব্য করার মতো শক্তিশালী দর্শক আপনার না-ও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি কী করবেন? এক্ষেত্রে আপনি আপনার সমসাময়িক স্বনামধন্য কনটেন্ট ক্রিয়েটর দের মন্তব্যের ঘরটি নিয়মিত চেক করবেন। তার দর্শক তার কাছ থেকে কেমন কনটেন্ট চায় তা মন্তব্যের ঘর চেক করলেই বোঝা যাবে। আর এখান থেকে আইডিয়া নিয়ে আপনি বর্তমান দর্শকের চাহিদা মাফিক কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন।

৬. নিজের পুরোনো কনটেন্ট Explain করে নতুন কনটেন্ট তৈরি করুন

নিজের পুরোনো কনটেন্ট Explain করে নতুন কনটেন্ট তৈরি করুন

ইতোমধ্যে পাবলিশ হয়েছে আপনার এমন কনটেন্ট গুলো খুব মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করুন। দেখবেন এই কনটেন্ট গুলোতে অনেক ফাঁক ফোকর রয়েছে। নিজের কনটেন্ট এর গ্যাপ গুলো নিজেই খুঁজে বের করুন এবং ঐ মিসিং পয়েন্ট গুলো নিয়ে নতুন করে কনটেন্ট তৈরি করুন। এভাবে আপনি নতুন নতুন বেশ কিছু কনটেন্ট আইডিয়া পাবেন৷

ধরুন আপনি মার্কেটিং নিয়ে একটি কনটেন্ট পাবলিশ করেছিলেন যেখানে মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন। এবার মার্কেটিং এর ধরন গুলোকে আলাদা আলাদা টপিক হিসেবে নিয়ে আপনি অনেক গুলো নতুন কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন। যেমন: ডিজিটাল মার্কেটিং এর ওপরে একটা, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ওপরে একটা, অফলাইন মার্কেটিং এর ওপরে একটা ইত্যাদি। এরকম আলাদা আলাদা বিষয়ের ওপরে আলাদা আলাদা কনটেন্ট তৈরি করা শুরু করুন।

এভাবে ডিটেইলস লিখতে লিখতে দেখবেন আপনার লেখার মধ্যে থেকেই আরও অনেক নতুন নতুন আইডিয়া অটোমেটিক ভাবে মাথায় চলে আসবে।

শেষকথা

যারা কনটেন্ট তৈরি করতে গিয়ে টপিক নির্বাচনে হিমশিম খাচ্ছেন আশাকরি তাদের জন্য আজকের টিউনটি উপকারী ছিল। উপরোক্ত ছয়টি টিপস নিয়মিত ফলো করলে কনটেন্ট টপিক নিয়ে আর চিন্তায় পড়তে হবে না। আর একটি বিষয় হলো, যখনই কোনো টপিক বা আইডিয়া আপনার মাথায় চলে আসবে সাথে সাথে সেটা খাতায় বা মোবাইলের নোটপ্যাডে টুকে রাখবেন। এভাবে রাখলে আইডিয়া গুলো পুনরায় হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। বরং অনেক নতুন নতুন আইডিয়া জমা হতে থাকবে।

টিউনটি ভালো লাগলে একটি জোসস করে দিবেন প্লিজ। কোনো বিষয় সম্পর্কে জানার থাকলে অবশ্যই টিউনমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।



Source link

  • Related Posts

    যে ৪ টি সময়ে মোবাইল ব্যবহার করলে হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি | Techtunes

    স্মার্টফোন হয়ে উঠেছে এখন মানুষের চব্বিশ ঘণ্টার সঙ্গী। স্মার্টফোন ছাড়া যেন আমরা এখন একটা মুহূর্ত-ও কল্পনা করতে পারি না। সময়ে অসময়ে সারাক্ষণ আমাদের হাতে মোবাইল থাকেই। প্রয়োজন না হলেও এটি…

    App রিভিউ এর কাজ করে আয় করুন! অনলাইন ইনকাম এর একটি চমৎকার উপায় | Techtunes

    অনলাইন থেকে টাকা আয় করার কতো কতো মাধ্যম যে এখন রয়েছে তার হয়তো নির্দিষ্ট কোনো পরিসীমা নেই। কিন্তু আমরা সবগুলো আয়ের উপায় জানি না বিধায় কাজ করতে পারি না। অনেকেই…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *