টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার ৭ টি কার্যকরী টিপস | Techtunes


সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে চাইলে বেশিরভাগ মানুষই টিকটক কে কাজে লাগিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কেননা টিকটক ভিডিও তৈরি করা তুলনামূলক বেশি সহজ। পাশাপাশি টিকটক এর ইউজার সংখ্যা অনেক বেশি বিধায় খুব দ্রুত এই প্লাটফর্মে ভিডিও রিচ হয়। তাইতো বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুন ছেলেমেয়েরা টিকটক এর সাহায্যে নিজেকে এবং নিজের কর্মকান্ডকে ভাইরাল করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে ভিডিও তৈরি করা এবং ভাইরাল করা সহজ হলেও অনেকেই দীর্ঘ দিন প্রচেষ্টা করেও ভিডিও ভাইরাল করতে পারে না। আজকের টিউনে এমন ৭ টি টিপস শেয়ার করবো যা ফলো করে আপনি খুব সহজেই টিকটক ভিডিও ভাইরাল করতে পারবেন৷ অর্থাৎ আপনিও হতে পারবেন ভাইরাল টিকটকার৷ আপনি যদি একজন জনপ্রিয় টিকটকার হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে চান তাহলে আজকের টিউনটি আপনার জন্য। তাই চলুন দেরি না করে টিপস গুলো জেনে নেয়া যাক।

১. টিকটকে নিয়মিত একটিভ থাকুন

টিকটকে নিয়মিত একটিভ থাকুন

অনেকেই মনে করেন টিকটক একাউন্ট তেরি করে মাঝে মাঝে দু’একটা কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও ছাড়লেই বুঝি ভাইরাল হওয়া সম্ভব। কিন্তু এটা আসলে ভুল ধারনা। বর্তমান টিকটক সেলিব্রিটি যারা আছেন তারা কিন্তু একদিনেই ভাইরাল হতে পারেননি। এজন্য তাদের নিয়মিত টিকটক এর পেছনে শ্রম দিতে হয়েছে, নিয়মিত ভিডিও তৈরি করতে হয়েছে এবং একটিভ থাকতে হয়েছে। যে কোনো সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে নিজের একটি জনপ্রিয় ইমেজ তৈরি করতে চাইলে আসলে নিয়মিত একটিভ থাকার বিকল্প নেই।

এবার একটিভ থাকা বলতে কী বোঝায় সেটা আসলে জেনে নেয়া দরকার। নিয়মিত একটিভ থাকার প্রথম শর্ত হলো প্রতিদিন কমপক্ষে একটা বা দুটো ভিডিও তৈরি করে আপলোড করা। ভিডিওর টিউনমেন্টে রিপ্লাই করা এবং অন্য টিকটক ইউজার দের সাথে একটি সুসম্পর্ক গড়ে তোলা। মনে রাখবেন যে কোনো সোস্যাল মিডিয়া সাইটে নিজের কমিউনিটি বিল্ড আপ করতে পারলে এমনিতেই কনটেন্ট ভাইরাল হয়ে যাবে। আর কমিউনিটি বিল্ড আপ করার জন্য নিয়মিত একটিভ থাকার বিকল্প নেই।

২. ট্রেন্ডি টপিক এর সাথে মিলিয়ে ভিডিও তৈরি করুন

ট্রেন্ডি টপিক এর সাথে মিলিয়ে ভিডিও তৈরি করা

টিকটক এর দর্শকদের মধ্যে বেশিরভাগই হয় হুজুগে পাবলিক। অর্থাৎ চলমান ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে দিতে তারা একটু বেশিই পছন্দ করে। তাই চলমান ট্রেন্ড এর সাথে তাল মিলিয়ে ভিডিও টপিক সিলেক্ট করুন। সেই সাথে সাথে মিউজিক যেন ট্রেন্ড এর সাথে যুতসই হয় সেদিকেও লক্ষ রাখুন। সময়ের সাথে সাথে নিজেকে এবং নিজের কনটেন্ট কে আপডেট করতে না পারলে টিকটকার হিসেবে আপনি ব্যর্থ হবেন।

আপনি একটি ভিডিও তৈরি করলেন যার মিউজিক এবং বিষয়বস্তু কয়েক মাস আগে খুব জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু এখন আর পাবলিক এই ভিডিও দেখতে আগ্রহী হবে না। সুতরাং ট্রেন্ড ধরে রেখে সেই অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করুন। অতঃপর সময়ে সাথে তাল মিলিয়ে আপনিও হঠাৎ করে ভাইরাল হয়ে যাবেন।

৩. সংক্ষিপ্ত কিন্তু আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করুন

সংক্ষিপ্ত কিন্তু আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করুন

টিকটক মূলত শর্ট ভিডিও তৈরির জন্যই এতো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর ছোটো ছোটো ভিডিও গুলো খুব দ্রুত দর্শক আকর্ষণ করতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন এক মিনিটের কম সময়ের ভিডিও তৈরি করতে। টিকটকে কেউ দুই তিন মিনিটের লম্বা ভিডিও দেখার জন্য আসে না বললেই চলে৷

তবে ১৫ সেকেন্ড এর ভিডিও গুলো টিকটকে সবথেকে বেশি ভইরাল হয়। কেননা এই ধরনের ছোট ভিডিও টিকটক তুলনামূলক বেশি প্রমোট করে। তবে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই আপনাকে পুরো বিষয়বস্তু আকর্ষনীয় ভাবে তুলে ধরতে হবে। কেননা আগে কোয়ালিটি তারপর সব। তাই চেষ্টা করবেন আপনার ভিডিওর মূল বিষয় ১৫ সেকেন্ড এর ভিডিওর মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে।

৪. উপযুক্ত হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন

উপযুক্ত হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন

টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার একটি উল্লেখযোগ্য ট্রিকস হলো উপযুক্ত হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা। এজন্য আপনি যে ধরনের ভিডিও তৈরি করবেন সেই বিষয়ে আগে টিকটকে সার্চ করুন। দেখবেন মোটামুটি একই টপিকে আরও অনেক ভাইরাল ভিডিও ইতোমধ্যে টিকটকে রয়েছে। ঐ ভিডিওতে ব্যবহৃত হ্যাশট্যাগ গুলো খুব ভালোভাবে খেয়াল করুন এবং একই ভাবে নিজের ভিডিওতে একই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।

উপযুক্ত হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করলে আপনার ভিডিও অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌছাবে। কেউ আপনার তৈরি করা ভিডিও টপিকে সার্চ করলে অন্যান্য ভিডিওর সাথে আপনার ভিডিওটি তার সামনে চলে আসবে। পাশাপাশি আপনার তৈরি করা ভিডিওর টপিক গুলো যারা নিয়মিত দেখে তাদের হোমপেইজে বেশি বেশি আপনার ভিডিও Show করবে। সুতরাং উপযুক্ত হ্যাশট্যাগ খুঁজে বের করে আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করুন। আশাকরি এই ট্রিকস টি অনেক বেশি কাজে আসবে।

৫. নিজের ক্রিয়েটিভিটি প্রদর্শন করুন

নিজের ক্রিয়েটিভিটি প্রদর্শন করুন

প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন করুন যে আপনার ভিডিও মানুষ কেন দেখবে। অবশ্যই আপনার ভিডিওর মধ্যে এমন কিছু থাকতে হবে যা দর্শকদের নতুন কিছু শেখাবে, অবাক করবে অথবা বিনোদন দেবে। অর্থাৎ আপনার ভিডিও কোয়ালিটি খুবই ইউনিক ও আকর্ষণীয় করতে হবে। নিজের গুন ও সৃজনশীলতা ফুটিয়ে তুলতে হবে ভিডিওর মাধ্যমে। যাতে কেউ আপনাকে ইগনোর করতে না পারে।

আপনি আপনার ভিডিওতে যতো বেশি ক্রিয়েটিভ কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে পারবেন ঠিক ততোটাই দর্শকের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠবেন। হতে পারে আপনার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড, শিক্ষনীয় কর্মকাণ্ড, নাচ, রান্না, ড্রাইভিং, শরীরচর্চা সহ উল্লেখযোগ্য যে কোনো বিষয়ে আপনি আপনার পারদর্শীতা তুলে ধরতে পারেন। এই ধরনের ইউনিক ও অবাক করা ক্রিয়েটিভিটি মানুষ খুব দ্রুত পজিটিভলি নিতে পারে।

৬. কভার ফটো ব্যবহার করুন

কভার ফটো ব্যবহার করুন

ইউটিউব এবং ফেসবুক ভিডিওতে ব্যবহৃত থাম্বনেইল এর কথা তো কমবেশি অনেকেই শুনেছেন৷ অর্থাৎ ভিডিও বন্ধ থাকা অবস্থায় ভিডিওর শুরুতে যে ছবিটি দেখতে পাওয়া যায় সেটিই মূলত থাম্বনেইল ফটো। টিকটক ভিডিওর ক্ষেত্রে এই থাম্বনেইল কেই বলা হয় কভার ফটো। অনেকেই টিকটক ভিডিওর সাথে এই কভার ফটো এড করেন না। কিন্তু দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য এই থাম্বনেইল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

থাম্বনেইল দেখে অনেকেই টিকটক ভিডিও দেখার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। এবং একটার পর একটা ভিডিও আপনার প্রোফাইল থেকে দেখতে থাকে। আর শুধু থাম্বনেইল তৈরি করলেই হবে না, থাম্বনেইল টি হতে হবে খুবই আকর্ষণীয় এবং ভিডিও টপিক এর সাথে রিলেটেড। যারা টিকটক থাম্বনেইল তৈরি করতে পারেন না এবং তা ভিডিওর সাথে যুক্ত করতে পারেন না তারা কয়েকটি ইউটিউব টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখলেই বিষয়টি খুব ভালোভাবে শিখে নিতে পারবেন৷ সুতরাং এরপর থেকে ভিডিও তৈরির সাথে সাথে থাম্বনেইল তৈরি ও তা ভিডিওর সাথে যুক্ত করার বিষয়টিকে সমান ভাবে গুরুত্ব দিতে ভুলবেন না।

৭. উপযুক্ত ফিল্টার ব্যবহার করুন

উপযুক্ত ফিল্টার ব্যবহার করুন

টিকটক এর জনপ্রিয়তার একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো এর ফিল্টার। আপনি আপনার ভিডিও টপিক এর সাথে যতো বেশি মানানসই ফিল্টার ব্যবহার করতে পারবেন ঠিক ততোটাই পারফেক্ট হবে আপনার ভিডিও। কোন ভিডিও ফুটেজে কেমন ফিল্টার ব্যবহার করবেন সেটা আপনি নিজেই কয়েকদিন এক্সপেরিমেন্ট করলে বের করে ফেলতে পারবেন। মেয়েদের ফিল্টার ছেলেদের মুখে ব্যবহার করলে যেমন বিষয়টা হাস্যকর হবে ঠিক তেমনই ছেলেদের জন্য উপযুক্ত ফিল্টার মেয়েদের ভিডিওর সাথে যুক্ত করলে বিষয়টি খুব বেশি আকর্ষণীয় হবে না।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বেশি আকর্ষনীয় করার জন্য আছে খুবই জনপ্রিয় কিছু ফিল্টার। আবার কিছু ভিডিও ফুটেজ আছে যা ফিল্টার ছাড়াই দারুণ লাগে। সুতরাং একজন ভাইরাল টিকটকার হওয়ার জন্য আপনাকে ফিল্টার ব্যবহারের বিষয়টির ওপরে খুবই পারদর্শী হতে হবে।

শেষকথা

আশাকরি উপরের টিপস গুলো ফলো করে নিয়মিত টিকটক ভিডিও তৈরি করলে খুব অল্প দিনের মধ্যেই আপনার ভিডিও ভইরাল করতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন যে কোনো সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে রাতারাতি ভাইরাল হওয়া একপ্রকার অসম্ভব বললেই চলে। চাই নিয়মিত লেগে থাকা এবং প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার মতো মনমানসিকতা। একমনে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলে খুব বেশি সময় লাগবে না বললেই চলে। ধন্যবাদ।



Source link

  • Related Posts

    যে ৪ টি সময়ে মোবাইল ব্যবহার করলে হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি | Techtunes

    স্মার্টফোন হয়ে উঠেছে এখন মানুষের চব্বিশ ঘণ্টার সঙ্গী। স্মার্টফোন ছাড়া যেন আমরা এখন একটা মুহূর্ত-ও কল্পনা করতে পারি না। সময়ে অসময়ে সারাক্ষণ আমাদের হাতে মোবাইল থাকেই। প্রয়োজন না হলেও এটি…

    App রিভিউ এর কাজ করে আয় করুন! অনলাইন ইনকাম এর একটি চমৎকার উপায় | Techtunes

    অনলাইন থেকে টাকা আয় করার কতো কতো মাধ্যম যে এখন রয়েছে তার হয়তো নির্দিষ্ট কোনো পরিসীমা নেই। কিন্তু আমরা সবগুলো আয়ের উপায় জানি না বিধায় কাজ করতে পারি না। অনেকেই…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *